ব্লগ vs ইউটিউব : কোনটি আপনার জন্য বেস্ট | Blogger না Wordpress কোনটি ব্যবহার করবেন

ব্লগ vs ইউটিউব : কোনটি আপনার জন্য বেস্ট | Blogger না Wordpress কোনটি ব্যবহার করবেন

ব্লগ vs ইউটিউব : কোনটি আপনার জন্য বেস্ট?

বর্তমান সময়ে আপনি এমন কোনো মানুষ খুঁজে পাবেন না যে কখনো ইন্টারনেট ব্যবহার করেনি।


ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে বেশির ভাগ মানুষই যেকোনো বিষয় জানার জন্য ইন্টারনেটকে ব্যবহার করছে।


হয়তো আপনিও তাদের মধ্যেই একজন!


আর ইন্টারনেটের এই সহজলভ্যতার করণে কিছু নতুন নতুন আয়ের উৎসও তৈরি হয়েছে। যার মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে সহজেই অর্থ উপার্জন করতে পারেন।


বর্তমান এই সময়ে আপনি যদি কাউকে প্রশ্ন করেন "আপনি কি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসে আয় করতে চান?"। তাদের উত্তর হবে হ্যাঁ। কেননা ঘরে বসে আয় করার মজাটাই অন্যরকম।


আর ইন্টারনেট বা অনলাইন থেকে আয় করার অন্যতম জনপ্রিয় দুইটি মাধ্যম হলো ব্লগিং এবং ইউটিউবিং। যা আপনার মতামতকে অন্যের সমনে তুলে ধরে অর্থ উপার্জনের সুযোগ করে দেয়।


আর অনলাইনে কাজ করার ক্ষেত্রে সবার মনে যে দুটি প্রশ্ন ঘুরপাক খায় তা হলো, আমি ব্লগে আর্টিকেল লেখব নাকি ইউটিউবে ভিডিও বানব? কোনটি আমার জন্য বেস্ট হবে?


এছাড়াও আরো কিছু প্রশ্ন আপনাদের মনে থাকতে পারে। আর তার মধ্যে অন্যতম কিছু প্রশ্ন হলো ব্লগিং ভালো না ইউটিউবিং ভালো, ব্লগিং থেকে বেশি আয় করা যায় নাকি ইউটিউব থেকে, ব্লগিং করা সহজ নাকি ইউটিউব করা, কোনটি আমার জন্য সর্বোত্তম


এই আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনাদের এসকল প্রশ্নের সমাধান পেয়ে যাবেন। যা আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে যে আপনার জন্য কোনটি ভালো।


তবে এ সবকিছুর পূর্বে চলুন অল্প কিছু কথায় জানা যাক ব্লগ কি এবং ইউটিউব কি?


ব্লগ কি?


অনলাইনে লেখা-লেখির মাধ্যমে নিজের চিন্তাধারা অন্যের কাছে তুলে ধরাই হলো ব্লগিং।


সহজ কথায় যদি আপনি অনলাইনে কোনো বিষয়ে লেখা লেখি করে কারো প্রশ্নের উত্তর দেন বা কারো জানার ইচ্ছা পূরণ করেন কিংবা নিজের মতামত অন্যের সাথে শেয়ার করেন, তাই হলো ব্লগিং।


আর যে ব্যাক্তি অনলাইনে লেখা-লেখির মাধ্যমে ব্লগিং করে সেই হলো ব্লগার।


ইংরেজি Blog শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হলো ব্লগ। আর এই Blog শব্দের উৎপত্তি হয়েছে Weblog শব্দ থেকে।


ব্লগ হলো একধরনের ওয়েবসাইট যেখানে ব্লগাররা তাদের আর্টিকেল পাবলিশ করেন আর ব্যবহারকারীরা তাদের মতামত জানাতে পারেন।


ঘরে বসে আয় করা যায় বলে অনেকেই ব্লগিং শুরু করতে চান। তবে অনেকেই মনে করেন একটি ব্লগ শুরু করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। যা সম্পূর্ণ একটি ভুল ধারণা। আপনি ইচ্ছে করলে খুব সহজে মাত্র ১০ মিনিটে আপনার একটি নতুন ব্লগ তৈরি করতে পারেন।


ব্লগিং শুরু করার অন্যতম দুটি জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ব্লগার ও ওয়ার্ডপ্রেস। যেখানে আপনি কোনো প্রোগ্রামিং নলেজ ছাড়াই আপনার একটি নতুন ব্লগ শুরু করতে পারেন।


ইউটিউব কি?


ইউটিউব হলো বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম। এটিও হলো একধরনের ওয়েবসাইট, যেখানে ভিডিও পাবলিশ করা হয়।


অনলাইনে এরকম আরো কিছু ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এদের মধ্যে কিছু প্ল্যাটফর্ম হলোঃ

  1. ভিমিও
  2. টুইচ
  3. ভিঅ

তবে এদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হলো ইউটিউব। আপনিও চাইলে ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করতে পারেন। এটা সবার জন্যই উন্মুক্ত।

তাই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে ইউটিউব শুরু করা যায় শুধু চায়না ছাড়া। তাদের নিজস্ব ভিডিও শেয়ারিং সাইট রয়েছে।

ইউটিউব প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করা হয় ১৪ই ফেব্রুয়ারী ২০০৫ সালে, পেপালের তিন প্রাক্তন কর্মচারী চড হার্লি, স্টিভ চেন এবং জাওয়েদ করিম।

এখানে মজার ব্যাপার হলো ইউটিউবের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একজন হলেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত, জাওয়েদ করিম।

পরবর্তীতে ২০০৬ সালের নভেম্বরে ১.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে গুগল ইউটিউবকে কিনে নেয়। বর্তমানে এটি গুগলের আওতায় পরিচালিত হয়ে আসছে।

এখন যেকেউ গুগলের নিয়ম মেনে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করতে পারে। একজন ব্লগার যেমন তার মেধাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে ব্লগ আর্টিকেল লেখে ঠিক তেমনি ইউটিউবে মানুষ তার মেধাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে ভিডিও তৈরি করে। যে ব্যাক্তি ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করে তাকে বলা হয় ইউটিউবার।


ইউটিউব হলো পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম ওয়েবসাইট এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম সোসাইল মিডিয়া নেটওয়ার্ক।


আপনি জেনে অবাক হবেন, ইউটিউবে গড়ে প্রতিদিন ৫ বিলিয়ন ভিডিও দেখা হয় এবং ২ বিলিয়ন এক্টিভ ইউজার রয়েছে। তাছাড়াও প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ভিডিও ইউটিউবে আপলোড হচ্ছে।


এই হলো ব্লগিং এবং ইউটিউব এর সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ। এবার আমরা আলোচনা করব ব্লগ এবং ইউটিউব এর সুুবিধা সমূহ।


ব্লগিং এর সুবিধাসমূহ


আমরা প্রথমে আলোচনা করব ব্লগিং সম্পর্কে। এখানে আমি আপনাকে বলব কেন আপনার ব্লগ শুরু করা উচিৎ। এবং পরবর্তীতে এর অসুবিধা নিয়ে আলো চনা করব।


তাহলে চলুন ব্লগিং এর সুবিধাসমূহ জানা যাক...


নিজেকে সৃজনশীল করে তুলুন


ব্লগিং আপনার ভিতরের সৃজনশীলতাকে বাইরে বেরিয়ে আনতে সহায়তা করে।


ব্লগিং করতে হলে আপনাকে প্রতি নিয়ত নতুন নতুন বিষয় শিখতে হবে, যাতে আপনি আপনার ব্লগে লিখতে পারেন।


তাছাড়াও আপনাকে আপনার ব্লগ ডিজাইন করতে হবে যাতে সকলে আপনার ব্লগ পছন্দ করে। আর এর জন্য আপনাকে গ্রফিক্স ডিজাইন, প্রোগ্রামিং ইত্যাদি শিখতে হবে।


যাতে আপনি আপনার ব্লগকে একটি ইউনিক পদ্ধতি এবং ফাংশনের সাথে সবার সম্মুখে তুলে ধরতে পারেন। যা আপনার সৃজনশীলতাকে বৃদ্ধি করবে।


আপনি নিজেই নিজের ব্লগের মালিক


ব্লগিং এর দ্বিতীয় ও অন্যতম একটি সুবিধা হলো আপনার ব্লগের মালিক আপনি নিজে, এতে অন্য কারো হস্তক্ষেপ নেই।


আপনি যদি নিজে সার্ভার তৈরি করে আপনার ব্লগকে হোস্ট করেন বা কোনো হোস্টিং প্রভাইডারের কাছ থেকে হোস্টিং কিনে আপনার ব্লগকে হোস্ট করেন


আপনার ব্লগের ভিতর অবস্থিত সকল কিছুর মালিক আপনিই।


আমরা পরবর্তীতৈ যখন ইউটিউব নিয়ে আলোচনা করব তখন আপনি আমাকে বলতে দেখবেন ইউটিউবে অবস্থিত আপনার সকল কন্টেন্ট এর মালিক পুরোপুরি আপনি নন।


ইউটিউব আপনার কন্টেন্টকে নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ইউটিউব চাইলে আপনার কন্টেন্টকে ডিলিট করতে পারে এমন কি আপনার সম্পূর্ণ ইউটিউব চেনেলকে পর্যন্ত ডিলিট করতে পারে।


যা সত্যিই চিন্তার বিষয়!


কিন্তু এমন কোনো ভয় ব্লগিং এ নেই। আপনি সম্পূর্ণভাবে আপনার ব্লগের মালিক। কেউই আপনাকে বা আপনার কন্টেন্টকে নিয়ন্ত্রণ করতে পরবেনা।


আপনি চাইলে ব্লগিংকে একটি ব্যবসা হিসেবেও করতে পারবেন, যার সম্পূর্ণ অধিকার থাকবে আপনার কাছে।


এমনকি একসময় আপনি আপনার ব্লগ বিক্রি করে একটি ভালো পরিমাণের টাকাও পেতে পারেন। বর্তমানে এমন অনেক প্ল্যাটফর্ম চলে এসেছে যেখানে আপনি আপনার ব্লগকে বিক্রি করতে পারেন। যেমনঃ flippa.com


মনিটাইজ করুন এবং অর্থ উপার্জন করুন


ব্লগিং শুরু করার তৃতীয় এবং একটি বড় কারণ হলো ব্লগকে মনিটাইজ করে অর্থ উপার্জন।


মানুষ সাধারণত ব্লগিং শুরু করে একথা ভেবেই যে এ থেকে সে অর্থ উপার্জন করবে যা তার মৌলিক চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে।


আপনি বিভিন্নভাবে আপনার ব্লগকে মনিটাইজ করে তা থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। তবে ব্লগিং থেকে অর্থ উপার্জনের ট্রেডিসনাল উপায় হলো গুগল এডসেন্স।


কিন্তু আপনি চাইলে গুগল এডসেন্স ব্যতিত আরো কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনার ব্লগ থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এদের মধ্যে কিছু পপুলার উপায় হলোঃ

  1. এফিলিয়েট মার্কেটিং
  2. স্পনসারশিপ
  3. ডিরেক্ট এড প্লেসমেন্ট
  4. নিজের প্রোডাক্ট বিক্রি ইত্যাদি


আপনি যদি লিখতে পছন্দ করেন


এটি হলো ব্লগিং এর আরেকটি বড় সুবিধা, যদি আপনি লিখতে পছন্দ করেন তাহলে ব্লগিং আপনার জন্যই।


ব্লগিং করতে হলে আপনাকে নতুন নতুন বিষয় শিখতে হবে, নতুন কুছু সম্পর্কে জানতে হবে এবং সর্বশেষ তা আপনার অডিয়েন্সকে জানাতে হবে।


যা করবেন আপনি কন্টেন্ট লেখার মাধ্যমে।


তাই আপনি যদি লেখা-লেখি পছন্দ করেন তাহলে অবশ্যই আপনার ব্লগিং শুরু করা উচিৎ।


আবার ব্লগিং মানুষকে চিনতেও সাহাজ্য করে...


মানুষ কি ভাবে তা জানতে সাহাজ্য করে। কারণ আেনি যখন ব্লগিং করেন তখন আপনার অডিয়েন্স আপনার কন্টেন্টে সময় ব্যায় করে, তাদের মতামত জানায় যার ফলে আপনার কন্টেন্ট সম্পর্কে তারা কিভাবে তা আপনি বুঝতে পারেন।


এতক্ষণ আমরা ব্লগিং এর সুবিধাসমূহ সম্পর্কে জানলাম, এবার জানব এর অসুবিধা নিয়ে।


ব্লগিং এর অসুবিধাসমূহ


এ পৃথিবীতে কোনো কিছুই সম্পূর্ণ আরামের নয়, সবকিছুতেই কোনোনা কোনো সমস্যা আছেই।


ঠিক তেমনি ব্লগিং এ ও এমন কিছু বিষয় আছে যা আপনার সমস্যার কারণ হতে পারে....


ট্রাফিক আনতে হবে


ব্লগিং করে অর্থ উপার্জন করতে হলে আপনার ব্লগে পর্যাপ্ত পরিমাণে ট্রাফিক থাকতে হবে।


আমি আপনাকে আগেই ব্লগিং থেকে কিভাবে অর্থ উপার্জন করতে হয় সে সম্পর্কে বলেছি।


তবে আপনি যে পদ্ধতিই ব্যবহার করেন না কেন, তার জন্য প্রয়োজন ব্লগে পর্যাপ্ত ট্রফিক।


আর ব্লগে ট্রাফিক আনার জন্য সবকিছু আপনার নিজেকেই করতে হবে। কিন্তু যখন আমরা ইউটিউব নিয়ে আলোচনা করব তখন দেখবেন এখানে সবকিছু অন্যরকমই।


আপনি ব্লগে ট্রাফিক আনার জন্য এসইও করেন কিংবা বিভিন্ন সোসাইল মিডিয়া নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেন, ট্রাফিক আনার সকল কিছু আপনার নিজেকেই করতে হবে।


কন্টেন্ট যা সহজে র‍্যাংক করবে, এমন কন্টেন্ট তৈরি করতে আপনাকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে।


আপনার ব্লগিং এ সফলতার জন্য আপনাকে ভালো কীওয়ার্ড রিসার্চ এবং কম্পিটিটর রিসার্চ করতে হবে, যাতে আপনি আপনার ব্লগের জন্য ভালো কিওয়ার্ড খুঁজে বের করতে পারেন।


আর শুধু কিওয়ার্ড রিসার্চ করে আর্টিকেল লিখলেই চলবে না একে গুগলে র‍্যাংকও করাতে হবে যাতে আপনার ব্লগে ট্রাফিক আসে। আর এর জন্য আপনাকে ভালো ভাবে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন শিখতে হবে।


তাই এটি হলো ব্লগিং এর একটি অন্যতম অসুবিধা।


সময়সাপেক্ষ কাজ


কোনো কিছু করতে হলে তাতে আপনাকে সময় দিতেই হবে। ব্লগিংও এর বাইরে নয়।


আপনি যদি একটি কোয়ালিটি ব্লগ বানাতে চান তাহলে আপনাকে এতে প্রচুর পরিমাণে সময় দিতে হবে। কারণ একে ভালো কোয়ালিটি পেতে হলে আপনাকে বিভিন্ন কাজ করতে হবে। যেমনঃ

  1. আপনি যখন একটি ব্লগ শুরু করবেন তখন একে সুন্দর করে ডিজাইন করতে হবে যাতে ফলঅনেক সময় এবং মেধার প্রয়োজন।

  2. একে শুধু সুন্দর করলেই হবে না, এতে ভালো কন্টেন্ট শেয়ার করতে হবে।

  3. আবার আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন আপনার কন্টেন্ট সকলে পছন্দ করে। আর এর জন্য আপনাকে আপনার অডিয়েন্স এর উপর নজর রাখতে হবে৷ যা অবশ্যই সময়সাপেক্ষ কাজ।

  4. এরপর আপনার কন্টেন্ট প্রমোট করার জন্য আপনাকে অনেক সময় ব্যায় করতে হবে। যাতে আপনার কন্টেন্টটি সকলের কাছে পৌঁছাতে পারে।

প্রতিযোগীতা মূলক


বর্তমানে ব্লগিং অত্যন্ত প্রতিযোগীতা পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে যেকোনো বিষয়েই আপনি ব্লগিং শুরু করেন না কেন সে বিষয়ে পূর্বেই লক্ষ লক্ষ ব্লগ তৈরি হয়ে আছে, যাদের সাথে আপনাকে প্রতিযোগীতা করে টিকে থাকতে হবে।


বর্তমানে আপনি যেই niche বা বিষয় নিয়েই ব্লগিং করেন না কেন আপনাকে প্রতিযোগীতার সম্মুখীন হতেই হবে।


তাই আমি আপনাকে বলব আপনি আপনার ব্লগের niche এর গভীরে গিয়ে কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ব্লগিং শুরু করুন এতে আপনি সহজে সফলতা পেতে পারবেন।


এতক্ষণ আমরা ব্লগিং এর সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করলাম। এবার জানব ইউটিউবের সুবিধা-অসুবিধা।


ইউটিউবের সুবিধাসমূহ


ইউটিউব বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম। আপনি শুধু মজার জন্যই নয় চাইলে অর্থ উপার্জনের জন্যও আপনি ইউটিউব ব্যবহার করতে পারেন।


আপনি যদি সহজে কোনো ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করতে চান তাহলে ইউটিউব আপনার জন্যই।


আপনি ইউটিউবে যে ভিডিও আপলোড করবে তা শুধু ইউটিউবেই নয় অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনেও তা র‍্যাংক করে। যেমনঃ গুগল।


তাহলে কি আপনি ইউটিউব ব্যবহার জরে আর্ন করতে চান?


যদি হ্যাঁ তবে চলুন প্রথমে এর সুবিধা অসুবিধা নিয়ে জানা যাক।


আনন্দের সাথে নতুন বিষয় শেখা যায়


ইউটিউবের প্রথম যে ভালো দিক আছে তা হলো আপনি মজার সাথে নতুন বিষয় শিখতে পারবেন।


ইউটিউবিং করার মাধ্যমে আপনি ভিডিও সম্পর্কে জানতে পারবেন, জানতে পারবেন ক্যামেরা সম্পর্কে, মজার সাথে শিখতে পারবেন ভিডিও এডিটিং।


আর সবথেকে বড় বিষয়, আপনি ইউটিউব এ কাজ করার মাধ্যমে অন্যের সাথে আপনার কমিউনিকেশন স্কিল বাড়াতে পারবেন। যা আপনার জীবনের সকল ক্ষেত্রে আপনাকে সাহাজ্য করবে।


সহজে প্রমোট করা যায়


ইউটিউবের আরেকটি ভালো দিক হলো এখানে আপনার কন্টেন্টকে প্রমোট করার প্রয়োজন হয় না।


ইউটিউব যদিও একটি ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম কিন্তু বর্তমানে এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিন


এখানে আপনি যে ভিডিও পাবলিশ করবেন তা র‍্যাংক করানোর জন্য এবং অডিয়েন্স আনার জন্য আপনাকে একে প্রমোট করার প্রয়োজন পরবেনা।


ইউটিউব নিজেই বিভিন্ন জায়গায় আপনার কন্টেন্টকে প্রমোট করবে। যা ব্লগিং এ একদম উল্টো।


সহজে অডিয়েন্স আনা যায়


ইউটিউবিং করে আপনি সহজেই অডিয়েন্স আনতে পারবেন। কারণ ইউটিউব করার সময় সকলে আপনাকে সহজে জানতে পারে, আপনার নলেজ সম্পর্কে জানতে পারে, আপনার কথা বলার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারে।


এতে তারা সহজেই আপনার উপর ভরসা করতে পারে। এতে আপনার audience আনা অনেক সহজ হয়ে যায়।


ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করা যায়


আপনাদের মধ্যে অনেকে ইউটিউব শুরু করছেন বা করবেন শুধুমাত্র আনন্দের জন্য, অনেকে শুরু করে ব্রন্ড তৈরির জন্য আবার অনেকে অর্থ উপার্জনের জন্য।


তবে বেশিরভাগ মানুষেরই ইউটিউব শুরু করার প্রধান উদ্দেশ্য হলো তা থেকে অর্থ উপার্জন


ইউটিউব থেকে আয় করার প্রধান উপায় হলো গুগল এডসেন্স, যা সকলেই ব্যবহার করতে পছন্দ করে।


আপনি যদি আপনার ইউটিউবের ভিডিওতে গুগল এডসেন্স এর এড যুক্ত করেন তবে আপনি এর সাহায্যে ব্লগের তুলনায় বেশি টাকা আয় করতে পারবেন।


এছাড়াও যদি এই ইউটিউব চ্যানেল ভালো গ্রু হয় তবে আপনি এতে অন্যের প্রোডাক্ট বিক্রি করে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন। আবার ইচ্ছে করলে নিজের প্রোডাক্টও বিক্রি করতে পারবেন।


ইউটিউব এর অসুবিধাসমূহ


আমি আপনাকে আগেই বলেছি প্রত্যেকটি জিনিসেরই সুবিধা অসুবিধা দুটি দিকই আছে। ঠিক তেমনি ইউটিউবেরও সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধা রয়েছে।


যা নিয়ে এখন আমরা আলোচনা করব...


এডিটিং এ অনেক সময়ের প্রয়োজন


আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলের জন্য যে ভিডিও তৈরি করেন তা এডিটিংও করতে হয়। আর এই এডিটিংই ইউটিউবের সবচেয়ে সময় সাপেক্ষ কাজ।


ভিডিও এডিটিং করতে হলে আপনাকে সর্বপ্রথম এডিটিং কিভাবে করে তা জানতে হবে। আর শুুধ এডিটিং জানলেই হবে না, আপনাকে ভিডিও সুট করাও জানতে হবে।

  1. সর্বপ্রথম আপনাকে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের জন্য একটি niche বা বিষয় নির্ধারণ করতে হবে।

  2. এরপর আপনার ইউটিউব চ্যানেলের জন্য দরকার হলো ভিডিওর।

  3. এর জন্য আপনাকে রিসার্চ করতে হবে, কোন টপিক আপনার জন্য সর্বোত্তম।

  4. এরপর ভিডিও সুট করতে হবে।

  5. তারপর সুট করা ভিডিও এডিটিং করতে হবে।

  6. এরপর এর জন্য থাম্বনেল তৈরি করে তা ইউটিউবে পাবলিশ করতে হবে।
যা অবশ্যই সময়সাপেক্ষ কাজ। তবে আপনাকে একে প্রমোট করার জন্য ব্লগিং এর মতো এতো সময় ব্যায় করার প্রয়োজন নেই। ইউটিউব নিজে থেকেই আপনার ভিডিও প্রমোট করবে।

আপনাকে শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে যেন আপনার কন্টেন্ট আপনার অডিয়েন্স পছন্দ করে। তারা যেন আপনার কন্টেন্ট দেখে তৃপ্ত থাকে।


আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলের সম্পূর্ণ মালিক নন


ইউটিউব এর সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো আপনি সম্পূর্ণভাবে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের মালিক নন।


এখানে আপনি আপনার নাম দিয়ে ইউটিউব শুরু করতে পারেন। এবং ছবিও যুক্ত করতে পারেন। তবে এরপরও আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলের সম্পূর্ণ মালিকত্ব পান না।


যদিও আপনি আপনার কন্টেন্ট যেমন ভিডিও এবং অন্য সব ছবি আপলোড এবং ডাউনলোড করতে পারেন। এমনকি অন্য প্ল্যাটফর্মে তা ব্যবহারও করতে পারেন।


কিন্তু ইউটিউব বা গুগল যেকোনো সময় আপনার ইউটিউব চ্যানেল বন্ধ করতে পারে।


ইউটিউব চাইলে যেকোনো সময় আপনার ইউটিউব একাউন্ট ডিজেবল করতে পারে। ব্লগে যেমন আপনি সম্পূর্ণ মালিকত্ব পান তেমনটি ইউটিউবে হয় না।


প্রতিযোগিতা বেশি


আপনি যেই ফিল্ডেই কাজ করেন না কেন এতে আপনি কম বেশি প্রতিযোগিতা পাবেনই। ইউটিউব এর কোনো ব্যতিক্রম নয়।


তবে ইউটিউবে প্রতিযোগিতা ব্লগের মতো এতো বেশি নয়।


এর প্রধান কারণ হলো সকলে ক্যামেরার সমনে আসতে সাহস পায় না। এ কারণেই এখনো ইউটিউবে ব্লগের মতো এতো বেশি প্রতিযোগিতা হয় নি।


এবার চলুন ব্লগ এবং ইউটিউব এর মধ্যে দেখা যাক কি কি মিল রয়েছে।


ব্লগ এবং ইউটিউব এর মধ্যে মিল


ব্লগ এবং ইউটিউব এর মধ্যে যেসকল মিল রয়েছে তা নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ


১. অরিজিনাল কন্টেন্টঃ


আপনি ব্লগ কিংবা ইউটিউব যেটা নিয়েই কাজ করেন না কেন আপনাকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে আপনার কন্টেন্টের উপার।


ইংরেজিতে একটি প্রবাদ বাক্য আছে

"Content is king"


এর অর্থ হলো আপনি যেই ফিল্ডেই কাজ করুন সকলে আপনাকে মূল্যায়ণ করবে আপনার মেধা আপনার কাজ দেখেই।


ঠিক তেমনিই আপনি ব্লগিং কিংবা ইউটিউব যাই করেন আপনার কন্টেন্টই আপনার জন্য সফলতা বয়ে আনবে।


আপনাকে সফলতা পাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত আপনাকে নতুন, ইউনিক এবং অরিজনাল কন্টেন্ট শেয়ার করতে হবে।


কাউকে নকল করে কিংবা অন্যের কন্টেন্ট নিজের ব্লগ বা ইউটিউবে শেয়ার করে আপনি সফল হতে পারবেন না।


২. কঠোর পরিশ্রমঃ

ব্লগিং কিংবা ইউটিউবে সফল হতে হলে আপনাকে পরিশ্রম করতেই হবে।


পরিশ্রন ছাড়া আপনি কোনোটাতেই সফল হতে পারবেন না। আপনি হয়তো শুনেই থাকবেনঃ

"পরিশ্রম সকল সফলতার মূল চাবিকাঠি"


তাই আপনাকে সফল হতে হলে পরিশ্রম করতেই হবে। আপনি যদি ব্লগিং করেন তবে আপনাকে নতুন নতুন পোস্ট পাবলিশ করতে হবে।


আর যদি ইউটিউব করেন তবে আপনাকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ভিডিও পাবলিশ করতে হবে।


তহলে মোট কথা হলো আপনি ব্লগিং করেন কিংবা ইউটিউব, সফলতা পেতে হলে আপনাকে পরিশ্রম করতেই হবে।


৩. ধৈর্য্য থাকতে হবেঃ

আপনি ব্লগ কিংবা ইউটিউব যেখানেই কাজ করেন না কেন সফলতা পাওয়ার জন্য আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে।


আপনাকে সফলতা পাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত কন্টেন্ট পাবলিশ করে যেতেই হবে। অল্প সময়ে কেথাও সফলতা পাবেন না।


আপনি যদি ধৈর্য্য ধরে কন্টেন্ট শেয়ার করতে থাকেন তাহলে একসময় আপনি সফলাতা পাবেন নি।


ব্লগ এবং ইউটিউব এর মধ্যে পার্থক্য


এতক্ষণ আমরা ব্লগিং এবং ইউটিউব এর মধ্যে মিলগুলো দেখলাম, এবার জানব এদের মধ্যে কি কি পার্থক্য রয়েছে।

ব্লগঃ

  1. আপনি যদি প্রফেশনালি ব্লগিং করতে চান তবে আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনতে হবে।

    তবে আপনি চাইলে blogger এ ফ্রিতে blogspot.com সাবডোমেইন নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন।

  2. ব্লগে আপনি নিজের ইচ্ছে মতো যেকোনো কন্টেন্ট (যেমনঃ টেক্সট, অডিও ভিডিও) শেয়ার করতে পারেন।

  3. ব্লগের মালিক সম্পূর্ণভাবে আপনি নিজেই।

  4. ব্লগিং করে আর্নিং করার জন্য গুগল এডসেন্স এর পাশাপাশি অন্য এড নেটওয়ার্কও ব্যবহার করা যায়।

    এমনকি আপনি চাইলে কোনো কম্পানির এড কোড নিয়ে তাও ব্যবহার করতে পারেন।

  5. ব্লগ ডিজাইন ও ম্যানেজ করার জন্য আপনার কাছে মিনিমাম কাছে টেকনিকাল নলেজ ও কোডিং নলেজ থাকতে হবে।


ইউটিউবঃ

  1. ইউটিউবে কাজ করার জন্য আপনাকে কোনো প্রকার হোস্টিং বা ডোমেইন কিনতে হবে না। ইউটিউব ভিডিও আপলোড করার জন্য ফ্রিতে আনলিমিটেড স্পেস দেয়।

    তবে এখানে প্রফেশনালি কাজ করার জন্য আপনাকে ক্যামেরা ও কম্পিউটার কিনতে হবে।

  2. ইউটিউবে নিজের ইচ্ছা মতো ভিডিও পাবলিশ করতে পারবেন, তবে তা ইউটিউবের নিয়ম মেনে পাবলিশ করতে হবে।

  3. ইউটিউবে আপনি শুধুমাত্র ভিডিও শেয়ার করতে পারবেন।

  4. ইউটিউবের মালিক সম্পূর্ণভাবে আপনি নন। (যা আমি আপনাকে আগেই বলেছি)

  5. ইউটিউবে আর্নিয় করার জন্য গুগল এডসেন্স ব্যতিত অন্য কোনো কম্পানির এডস্ ব্যবহার করতে পারবেন না।

  6. ইউটিউব ভিডিও পাবলিশ করার জন্য আপনাকে ভিডিও সুটিং ও এডিটিং জানতে হবে।


Conclusion : Blog vs Youtube


আশা করি উপরের আলোচনা দেখার পর ব্লগ না ইউটিউব কোনটি আপনার জন্য বেস্ট তা আপনি বুঝে গেছেন।


আর যদি তাও বুঝে না থাকেন তাহলে আমি বলব যদি আপনার লেখা লেখি করতে ভালো লাগে তবে আপনি ব্লগ শুরু করেন। আর যদি আপনি ক্যামেরা ফেস করতে পারেন তবে ইউটিউব শুরু করেন।


তবে আমি আপনাকে বলব যদি সম্ভব হয় তবে দুটোই শুরু করেন, আর দেখেন কোনটি থেকে আপনি বেশি আউটপুট পাচ্ছেন।


এখন আশা করি ব্লগ না ইউটিউব এ নিয়ে আর কোনো কনফিউশন নেই।


আপনার যদি এই কন্টেন্টটি ভালো লেগে থাকে তবে এটি আপনার বন্ধুদের সাথে তা শেয়ার করুন এবং আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে তবে কমেন্ট শেকসনে তা জিজ্ঞেস করুন।


ধন্যবাদ!


আরো পড়ুনঃ

  1. ব্লগার vs ওয়ার্ডপ্রেস
  2. গুগল এডসেন্স থেকে আয়
  3. ব্লগিং এর জন্য প্রফিটেবল niche